ফেরিঘাটে জনস্রোত চলছেই

সিটি নিউজ ডেস্ক ‍॥ সারাদেশে লকডাউনের ঘোষণা আসার পর থেকে মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া ফেরিঘাটে যে জনস্রোত শুরু হয়েছিল, সোমবার লকডাউনের মধ্যেও তা থেমে নেই। গণপরিবহন না থাকায় বিড়ম্বনা মাথায় করেই ঢাকা ও আশপাশের বিভিন্ন জেলা থেকে পরিবার-পরিজন নিয়ে নানাভাবে ভেঙে ভেঙে শিমুলিয়ায় ভিড় করছে মানুষ। ফেরিতে গাদাগাদি করে তারা চলেছেন দক্ষিণের জেলাগুলোতে। মাওয়া নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক সিরাজুল কবির সোমবার সকালে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ভোর থেকেই ভিড় দেখা যাচ্ছে। ছোট যানবাহনে, এমনকি হেঁটে হেঁটে আসছে সবাই। গত দুই দিনের মত ঘাটে আজও প্রচণ্ড চাপ রয়েছে।”

যাত্রীর চাপে ঘাটে ভেড়া ফেরি থেকে গাড়ি নামাতেও সমস্যা হওয়ায় সকাল থেকে পন্টুনে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
গণপরিবহন না থাকায় বেশি খরচ আর কষ্ট করে ঘাটে এসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফেরির অপেক্ষায় বসে থাকছেন তারা। লঞ্চসহ অন্যান্য নৌযান চলাচল বন্ধ থাকায় ফেরিতে ঠাঁসা ভিড়ে দাঁড়িয়েই তারা রওনা পদ্মা পাড়ি দিয়ে ওপাড়ে মাদারীপুরের বাংলাবাজার ঘাটের দিকে রওনা হচ্ছেন তারা।

লৌহজং থানার ওসি আলমগীর হোসাইন বলেন, “জনসাধারণ একেবারেই সচেতন না। তারা আন্তরিকও না।”

ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়তে থাকায় মুন্সীগঞ্জসহ ঢাকা বিভাগের সাত জেলায় গত ২২ জুন জরুরি পরিষেবা ছাড়া সব ধরনের কার্যক্রম ও চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করে সরকার। এসব জেলায় বাস, ট্রেন ও লঞ্চ চলাচলও বন্ধ রাখা হয়।

কিন্তু পণ্যবাহী ট্রাক ও জরুরি সেবার যানবাহন পারাপারের জন্য শিমুলিয়া বাংলাবাজার রুটে সীমিত পরিসরে ফেরি চালু রেখেছিল কর্তৃপক্ষ।

এদিকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতি উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছে যাওয়ায় বিশেষজ্ঞদের সুপারিশে সোমবার থেকে সারাদেশেই ‘লকডাউন’ জারির ঘোষণা আসে গত শুক্রবার। ফলে শনিবার সকাল থেকেই অনেকে ঢাকা ছাড়তে শুরু করেন। পণ্যের গাড়ির জন্য চালু রাখা ফেরিতে মানুষের ঠাসাঠাসি ভিড় শুরু হয়ে যায়। রোববারও একই পরিস্থিতি চলে।

সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী সোমবার সকাল থেকে রিকশা আর পণ্যবাহী গাড়ি ছাড়া কোনো ধরনের যানবাহন চলার কথা নয়। তারপরও মানুষ পদ্মাপাড়ে ছুটছে ফেরি ধরে ওপারে যাওয়ার আশায়।
ঘাটে চাপ ঠেকাতে সিরাজদিখান, শ্রীনগর ও শিমুলিয়ার হিলশা মোড়ে পুলিশের চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। সরকারি আদেশ অমান্য করেই চলছে নানা যানবাহন। ঘাটে পারাপারের অপেক্ষায় শতশত গাড়ি।

শিমুলিয়া ঘাটের বিআইডব্লিউটিসি ব্যবস্থাপক আহাম্মদ আলী বলেন, “ঘাটে আসা মানুষের যাকেই জিজ্ঞেস করি, সে-ই যুক্তি দেখায়। প্রয়োজনের কথা বলে। তাদের শৃঙ্খলার মধ্যে আনতে হবে। এক্ষেত্রে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা বেশি। ঘাটে যাতে একসঙ্গে বেশি মানুষ আসতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।”

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin