বিশ্বকাপ থেকে সরে দাঁড়ালেন তামিম

আগামী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলবেন না তামিম ইকবাল। চোট কাটিয়ে মাঠে ফেরার লড়াইয়ে থাকা অভিজ্ঞ ওপেনার বিশ্বকাপের আগেই ফিট হয়ে উঠবেন বলে আশা করছেন। তবে লম্বা সময় ধরে এই সংস্করণের বাইরে থাকায় ম্যাচ অনুশীলনের ঘাটতি এবং অন্যান্য পারিপার্শ্বিকতা মিলিয়েই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানান তিনি।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বুধবার দুপুর ১টার পরপর ভিডিও বার্তায় এই সিদ্ধান্তের কথা জানান তামিম। তার আগে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান ও প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীনকে তিনি জানিয়ে দেন নিজের ভাবনা।

গত মাসের জিম্বাবুয়ে সফরে ওয়ানডে সিরিজের পর থেকে হাঁটুর চোটে মাঠের বাইরে আছেন তামিম। তার পুনর্বাসন চলছে। এ দিন থেকেই শুরু হতে যাওয়া নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের দলে তিনি নেই চোটের কারণেই। বাংলাদেশের হয়ে সবশেষ টি-টোয়েন্টি খেলেছেন তিনি গত বছরের মার্চে, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে।

“ছোট্ট একটা ঘোষণা ছিল…”, ভিডিও বার্তায় এভাবে শুরু করে তামিম জানান তার চমকপ্রদ এই সিদ্ধান্ত।

“কিছুক্ষণ আগে আমি বোর্ড সভাপতি ও প্রধান নির্বাচককে ফোন করে বলেছি যে আমার মনে হয় না, বিশ্বকাপ দলে আমার থাকা উচিত। বিশ্বকাপের জন্য আমি ‘অ্যাভেইলঅ্যাবল’ নই।”

নিজের সিদ্ধান্তের পেছনের কারণগুলোও তুলে ধরেন তামিম।

“একটা বড় কারণ, গেম টাইম। বেশ কয়েকদিন ধরে খেলছি না এই ফরম্যাটে। দ্বিতীয়ত, ইনজুরি। যদিও ইনজুরি আমার মনে হয় না অত বড় সমস্যা। কারণ আমি আশা করি যে বিশ্বকাপের আগেই ঠিক হয়ে যাব।”

“আমার কাছে যে মেইন জিনিসটি ‘ট্রিক’ করেছে এই সিদ্ধান্ত নিতে, যেহেতু সবশেষ ১৫-১৬ টি-টোয়েন্টি খেলিনি এবং আমার জায়গায় যারা খেলছিল, আমার মনে হয় না, এটা কোনোভাবে ফেয়ার হবে তাদের প্রতি, যদি আমি হঠাৎ করে এসে ওদের জায়গাটা নিয়ে নেই।”

বিশ্বকাপ দলে তাকে রাখা হতো বলে ধারণা করছিলেন তামিম। কিন্তু সেটা ঠিক হতো বলে তিনি মনে করছেন না।

“সম্ভবত…হয়তোবা আমি বিশ্বকাপ দলে থাকতাম, এটা আমি জানি না…। এটা আমি মনে করি, হয়তোবা থাকতাম। আমার কাছে মনে হয় না, এটা ফেয়ার হতো।”

“এই বিশ্বকাপে আপনারা আমাকে দেখবেন না। তবে আমি এতটুকুই বলতে পারি, এই সিরিজ ও বিশ্বকাপের জন্য দলকে আমি সর্বোচ্চ শুভ কামনা জানাই।”

বিশ্বকাপে না খেলা মানে যে এই সংস্করণকে বিদায় নয়, সেটিও স্পষ্ট করে দিয়েছেন তিনি।

“আবার পরিষ্কার করে দেই, আমি অবসর নিচ্ছি না। অবসর নিচ্ছি না। কিন্তু এই বিশ্বকাপে আমার খেলা হবে না। আমার মনে হয়, তরুণ যারা ওপেন করছেন, বিশ্বকাপে ওদের সুযোগ পাওয়া উচিত। কারণ, ওরা গত ১৫-১৬ ম্যাচ ধরে খেলছে। ওদের প্রস্তুতি হয়তো আমার চেয়ে ভালো থাকবে। সঙ্গে এটাও মনে করি, তারা হয়তো দলকে আমার চেয়ে ভালো সার্ভিস দিতে পারবে।”

সংবাদমাধ্যমকে তিনি অনুরোধ করেন এই সিদ্ধান্তের ব্যাপারে তার ‘প্রাইভেসি’ বজায় রাখতে। আর জানান, মনের ডাক শুনেই এই পথে এগিয়েছেন।

“আমি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এটিতেই অটল থাকব। এখানে নতুন করে বলার কিছু নেই। সব কারণ বলে দিয়েছি। এখানে কোনো বিতর্ক নেই। বিতর্ক হওয়ার কিছু নেই।”

“আমার যা মনে হচ্ছিল, সেটাই করেছি। মানুষ হিসেবে আপনারা আমাকে অনেকেই চেনেন না, কিন্তু যারা আমার কাছের, সবাই আমার ব্যাপারে একটা জিনিস জানেন যে, আমি যা-ই করি, হৃদয়ের ভেতর থেকেই করি। আমার মন এটাই বলছিল যে এটাই সঠিক সিদ্ধান্ত। দলের জন্য এটাই ভালো।”

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin